| |

কেমন প্রজন্মের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব! হঠাৎ এমন হয়ে গেল নাকি আগে এ রকম ছিল?

নিউজ-ডেস্ক, আজকের বাংলাদেশ;

মাই লাইফ মাই অবভিয়াসলি ডিসিশন’ যার লাইফ তারই চলার কথা। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় আপনার সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অথবা পার্সোনাল লাইফে কতটুকু সুবিধা বয়ে আনছে৷ 

2023 সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বর্তমান পৃথিবীর তিনশ এক মিলিয়ন মানুষ সিভিয়ার ডিপ্রেশনে ভুগছে। 31.9% টিনএজার ভয়াবহ মানসিক অশান্তির শিকার। এর মধ্যে 8.3% মানুষ মানসিক ভাবে অলমোস্ট ড্যামেজ। 

বিজ্ঞাপন

 

বিজ্ঞাপন

 দিন শেষে বাড়ি ফিরে ফেসবুকে মিম দেখে হা হা রি অ্যাক্ট দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখুন তো আসলে কী হাসছেন! 

বিজ্ঞাপন

 এন সি ডি এস এর তথ্য মতে, 46.6% টিনএজার ড্রাগ অ্যাডিক্ট 70% এর বেশি টিনএজার পর্ন-এডিক্ট। মোবাইল ফোনের গড় স্ক্রিন টাইম দিনে চার ভাগের দেড় ভাগ, প্রায় আট ঘন্টা।
 20 শতাংশের বেশির ভাগ মানুষের মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা, 12% মানুষ ভুগছে পোস্ট ট্রম্যাটিক ডিসঅর্ডার রোগে।

চারদিকে দাম্পত্য সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদ। কেউ মিসোজিনি কে পছন্দ করছে। কেউ নিজেই নিজের জেন্ডার খুঁজে বের করতে পারছে না। চারদিকে কমপ্লিট ডিসট্রাকশন। কিন্তু এই সব কিছু এই গ্লোবাল ক্রাইসিসে এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পেছনে দায়ী কে।

কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে কয়েকটা উত্তর বের করে। তার পরে মূল রহস্য তাঁকে খুঁজতে হবে। 
প্রথম প্রশ্ন, হঠাৎ করেই পৃথিবীতে এমন হয়ে গেল নাকি আগে এ রকম ছিল? 
উত্তর, খুঁজতে খুঁজতে চলুন কিছু বিষয়ের উপর দৃষ্টিপাত করি জেনারেশন জি অথবা বিশেষ করে জেনারেশন আলফা যাদের জন্ম 2000 সালের পরে তারা ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মডার্নাইজেশন সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় সে তার মায়ের দৈনিক চার-আট ঘণ্টা মোবাইল ফোনের ব্যবহার থেকে শিকার হচ্ছে ডিভাইস রেডিয়েশনের, বাবার জ্বলন্ত সিগারেট থেকে শিকার হচ্ছে প্যাসিভ স্মোকিংয়ের।

জন্মের পর মায়ের গলায় গুনগুন গান না শুনে শুনছে বেবি শার্ক ডুডু, বাবার আঙ্গুল ধরে হাঁটা বাদ দিয়ে দেখছে ফার্স্ট মোশন হাইপার কার্ড অ্যানিমেটেড ভিডিও যে র‌্যাপিড শিফ্ট অফ কালারস ছোট বাচ্চাদের চোখ এবং ব্রেনে মারাত্মক ইফেক্ট ফেলছে। সুইফট চেঞ্জ অফ সিনস তৈরি করছে হাইপার অ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার বা মনোযোগ স্বল্পতা।

 বিএমসি সাইকিয়াট্রি আর 2022 সালে প্রকাশিত আর্টিক্যাল অনুযায়ী 13 থেকে 17 বছরের টিনএজারদের ভেতরে 50% এই মনোযোগ স্বল্পতায় ভুগছে। 
ফাস্ট মুভিং দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাবা মা দুজনই জব করছে এবং পরিবার থেকে বাচ্চাটি থাকছে একা।
 বাসায় একা একা থাকতে থাকতে ছোট বাচ্চারা বন্ধু হিসেবে নিচ্ছে ইন্টারনেট। 

ইন্টারনেট এমন এক দুনিয়া যা আপনাকে সব কিছু দিচ্ছে যা চাইছেন তার সব আপনি যত সার্চ করবেন যত স্ক্রোল করবেন ইন্টার্নেট আপনাকে ততই ডেলিভার করবে। 
বাস্তব জগতে আপনি যখন সুখ খুঁজে পাচ্ছেন না তখন আপনি ইন্টারনেটে নিজের মতো করে আলাদা এক জগৎ তৈরি করে নিচ্ছেন। 

ডোপামিন খরচ হতে হতে যখন শূন্যপ্রায় অবস্থা তখন মানসিক অশান্তিকে এড়ানো অসম্ভব। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, প্রশ্ন থেকে যায় ইয়াং জেনারেশনের এই নাজেহাল অবস্থার পেছনে বাবা মা কতটুকু দায়ী? উত্তর, খুঁজতে খুঁজতে চলুন একটা গল্প শুনি, জনি ডেপ কে তো সবাই জানেন। বিখ্যাত এই হলিউড অভিনেতা তীব্র মেন্টাল অ্যাংজাইটি এবং মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছেন। 
এক ইন্টারভিউতে তিনি বলেন, তাঁর এই মানসিক অশান্তির মূল কারণ তাঁর বাবা মা যখন তিনি মাত্র ১৫ বছর বয়সী ছিলেন তখন তার বাবা মায়ের নিত্য নৈমিত্তিক ঝগড়া তাঁকে বিষিয়ে তোলে। পরবর্তীতে বাবা মায়ের ডিভোর্সের পর তিনি একেবারে একা হয়ে যান৷ এবং একেবারে ভেঙে পড়েন। ১৫ বছর বয়সে যে সমস্যায় জনি ডেপ ভেসে উঠেছিলেন, সেই একই সমস্যায় নিজেও জড়িয়ে পড়েন। ২০১৭ সালে অ্যাম্বার হার্ডের সঙ্গে দাম্পত্য কলহের ঘটনা জানেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। 

শুধু জনি ডেপ না, বেশিরভাগ মানুষ যারা বাবা মায়ের সেপারেশন শিকার তাঁরা নিজেরাও পরবর্তীতে দাম্পত্য জীবন টিকিয়ে রাখতে পারে না। সংসার ভাঙার এই অন্তহীন চক্রের দাবানলে জেনারেশন পড়ছে সেই জেনারেশন মানসিকভাবে কীভাবে স্ট্যাবল হবে। যদিও আমরা এখনও মূল রহস্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। কিন্তু এক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে বর্তমান জেনারেশনের ডাউন ফলের অন্যতম বড় একটি কারণ ফ্যামিলি প্রবলেমস আর মডার্ন বাবা মায়ের দাম্পত্য কলহ। 

একটি সোশ্যাল রিসার্চের তথ্য মতে, 80% পরিবার তাদের পরিবারকে সময় দেয় না। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর জন্য ড্রাইভার কিংবা খাওয়ানোর জন্য কাজের লোক একবার নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন তো শেষ কবে সূর্যাস্ত দেখেছেন!
টাকার নেশায় মত্ত হয়ে কর্পোরেট দুনিয়ার চেয়ার থেকে উঠাই যেখানে বিলাসিতা, সেখানে সূর্যাস্ত দেখার প্রশ্নই উঠে না।

মর্ডান-প্যারেন্টস (আধুনিক পিতা-মাতা) মনে করেন, মানি ক্যান বাই দেয়ার চাইল্ড’স হ্যাপিন্যাস। 

প্রশ্নটা থেকে যায়, আসলেই কি তাই?

কোন মন্তব্য নেই